Tuesday, April 3, 2012

একজন মনার বেঁচে থাকা (by Delara Hossain): ১ম পর্ব

একজন মেয়ের গল্প শেয়ার করব । মেয়েটা যখন ক্লাস ফাইভে তখন সর্বপ্রথম সে ফিজিক্যালি অ্যাবিউজড হয়। এর পর থেকে প্রতিদিন হতো কখনও কাউকে বলেনি শুধু তার ছোট বোন জানত। সে তার মাকে জানাতে পারেনি। প্রথম বুঝেইনি সে অ্যাবিউজড হচ্ছে, আর ভয় পেত যদি তার মা এটা জানার পর মারা যায় কোথায় যাবে তারা? কারণ বাবা তো...

এই চিন্তাটা করতে করতে ক্লাস সেভেন, দুই বোন মিলে অনেক চিন্তা করল, কিন্তু মাকে জানাতে পারলো না । বড় বোন শুধু ছোট বোনকে আগলে রাখলো, অ্যাবিউজের প্রথম লক্ষণগুলো জানিয়ে দিলো। ছোট একটা বাসা ,দুই বোন ,মা আর বাবা। মায়ের শারীরিক সমস্যার জন্য মা বাবা একসাথে এক বিছানায় ঘুমাতেন না। বড় বোন বাবার কাছে, ছোট বোন মায়ের কাছে। দিন যায় ,রাত যায়,সময় গড়িয়ে চলে,কিন্তু সময় বদলায় না কেবল বড় মেয়ে মনার। আগে বাসায় কেউ না থাকলে তখন,কিন্তু রাত গড়ালেই তার শরীর উন্মাচিত হত জন্মদাতার কাছে, কখন ইনটারকোর্স করতেন না পাছে অন্য কোন সমস্যা হয়, সেই ভেবে।

মনার বাবা মা ভালোবেসে বিয়ে করেছিল, কিন্তু ঐ লোকটা প্রেম একবারে সহ্য করতে পারে না । সে মনে করে মেয়েরা প্রেম করলে নষ্ট হয়। কঠোর শাসনের মধ্যে রাখতেন, কারো বাসায় যাবে না,লুজফিটিং এর জামা পরতে হবে,সাজগোজ করা যাবে না,হৈচৈ করা যাবে না,সারা দিন বাসা, লেখাপড়া,টিভি দেখা এ-ই।
সময় গড়ালো,মনার মা কোনোদিনও জানলো না এই ভয়াল ঘটনার কথা। মনা এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে,রাত জেগে তাকে পড়তে হয়,খুব সাদামাটা একটা স্কুলে পড়ত, স্বপ্ন ডাক্তার হবে। মনা ভালো ছাএী ছিলো । মনা এখনও নগ্নভাবে উন্মাচিত হয়,মনটা প্রায়ই খারাপ থাকে তার।

কোচিংয়ে যায় সে,সেখানে একজন সিনিয়র ভাইয়াকে তার ভালো লাগে,কিন্তু বলতে পারে না। পরে বন্ধুদের সহযোগিতায় মনের কথা খুলে বলল। সিনিয়র ভাইয়া তাকে জানালো তুমি পরীক্ষায় ভালো করে ভালো কলেজে চান্স পেলে আমার উত্তর পাবে। সিনিয়র ভাইয়া মনার ভালো লাগার কথা বুঝতেন কিন্তু কিছু বলেননি। সিনিয়র ভাইয়া ভীষণ মেধাবী ছিলেন,ভীষণ বাস্তববাদী একজন মানুষ ছিলেন । তাই তার প্রতি এত ভালোবাসা,কত স্বপ্ন,তাকে মুক্ত করে নিয়ে যাবে, ভালোবাসার বাহুডোরে মনাকে রাখবে।

মনা যখন রাত জেগে পড়ত,তখন টিভি চলতো আর টিভিতে চলত 3X, আর সেটা অবলোকন করতেন মনার জন্মদাতা। দুই রুমের বাসায় একরুমে ছোট বোন আর মা ঘুমাতেন,আর অন্য ঘরে প্রতিনিয়ত যন্ত্রণায় ছটফট করত মনা।

এসএসসি পরীক্ষা শেষ। রেজাল্ট 4.50 without 4th subject। এবার কলেজ ভর্তির পালা,ঢাকার সেরা কলেজ Holy Cross-এ সে চান্স পেলো। মনে মনে অনেক খুশী মনার স্বপ্নপূরণের আর বাকি নেই, ফোন করলো সিনিয়র ভাইয়াকে,জানালো মনার ভর্তির কথা, কিন্তু বিধাতা বোধ হয় মনার মুক্তি চাননি আর তাই সে জানলো ঐ ভাইয়া বিবাহিত। স্বপ্ন শেষ।

মনা তার প্রিয় কলেজে চান্স পাওয়ার পর অনেক খুশী,খুশী তার মা এবং বাবা (বাবা ডাকতে হয়, কারণ ডাকার মতো আর কোন শব্দ মনার জানা নেই)।

আজকাল অনেক বেশীই আপসেট থাকে সে। সেদিন ক্লাসে ‍সিস্টার ফিজিক্যাল অ্যাবিউজ, নরমাল টাচ এসবের কথা বলছিলেন,চোখটা ছানাবড়া মনার, কী ভুল সে করেছে, কত কিছু সে হারিয়েছে, কোনো পুরুষই তাকে আর গ্রহণ করবে না। মনা তো হারিয়েছে তার সম্ভ্রম। সাইকিয়াট্রিস্টরা বলেন , এই ধরনের ঘটনায় ভিক্টিম অনেক ভয় পায়, নিজেকে অনেক দুর্বল ভাবে তাই সে শেয়ার করে না।

সব ভুলে মনা আর তার ছোট বোন সিদ্ধান্ত নিলো সে তার মা কে সব জানাবে। জানালো হলো। কিন্তু ....
মা খারাপ বলল মনাকে, ওকে বলল আত্মহত্যা করতে, মেনে নিতে পারলো না মনার মা । মনা নিজেকে অনেক অসহায় ভাবতে শুরু করলো। মনার নিজেকে তার বাবার কাছ থেকে দূরে রাখতে চেষ্টা করতে শুরু করল, কথা কম বলত, কিন্তু মানতে পারলো না মনার মা। রেগে একাকার । মনার মা নিজের মান সম্মানের ভয়ে তার স্বামীকে ছাড়লেন না। সমাজ কী বলবে? মনারা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল তাই মনার মা চায়নি নিজেকে আর্থিকভাবে অসহায় অবস্থায় দেখতে।

মনা চল্লিশটা স্লিপিং পিল খেলো, মৃত্যুও ধোঁকা দিলো মনাকে। সব কষ্ট সহ্য করতে পারছিলো না মনা। ক্লাসে প্রতিদিন আসে, কিন্তু কি পড়ায় কিছুই মনার মাথায় ঢোকে না। এইচএসসি পরীক্ষার পালা, মনা মডেল টেস্ট দিতে যায় কিন্তু পরীক্ষা তার হয় না। কলেজে টেস্ট পরীক্ষায় ০, ১৪, ২৬, এই নম্বর পেয়েছিল কেমিস্ট্রি, ম্যাথ আর ফিজিক্সে। মনা খারাপ ছাএী ছিলো না। কিন্তু আজ কিছুই সে পারছে না। অন্যদিকে মায়ের খারাপ ব্যবহারে তার মন শুধু চাইত সে কবে এই বাসা থেকে চলে যাবে। মনা কেমিস্ট্রি এবং ফিজিক্সের খাতা সাদা রেখেছিল। স্বপ্নে দেখেছিল তার রোল নম্বরটা ফেলের লিস্টে। এই স্বপ্নটা সত্যি হয়েছিল।

আজ সেই সময়টা পার হয়েছে। মনার বয়স ২৮ বছর।
she is a lawyer now. She accomplished her degree from a private university. She tried her level best for public university but unfortunately that did not happen. She had to depend on her parents again; she has not any other option. Mona wanted to study, she wanted to establish herself, but Mona was not happy because she wanted to get rid of her family and parents but that never happened. Mona did not have enough money to support herself, that’s why she could not do so.

Till now Mona is not happy, this is the first part of the story.

লেখক:
দিলারা হোসেইন


No comments: