Sunday, July 23, 2017

হাজেরা বেগমের শিশুরা

হাজেরা বেগমের কথা প্রথমে বলেছিলেন জোবাইদা নাসরীন। উনি আমাদের মেয়ে নেটওয়ার্ক-এর সদস্য। সন্ধি এই মেয়ে নেটওয়ার্ক-এর একটি স্বেচ্ছাসেবী দল। সন্ধি'র ব্যাপারে জেনে জোবাইদা আপা বলেছিলেন হাজেরা বেগমের পাশে দাঁড়ানোর কথা। সে সময় আমরা পার্বত্য অঞ্চলের দুর্গতদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করছিলাম। হাজেরা বেগমের সাথে তাই যোগাযোগ করতে দেরি হলো কিছুদিন। এর মধ্যে ফেসবুকে একটা ভিডিও চোখে পড়ল হাজেরা বেগমকে নিয়ে।



জোবাইদা আপা ততদিনে নিজে গিয়ে হাজেরা আপার সাথে দেখা করে এসেছেন। জোবাইদা আপার কাছ থেকে নাম্বার নিলাম হাজেরা বেগমের। ফোন দিলাম। কথা হলো। আমাদের কেউ কেউ টাকা দিতে চাইছিলো। কিন্তু হাজেরা আপা দেখা না করে টাকা নেবেন না। উনি চান আমরা যাই, বাচ্চাদের সাথে কথা বলি, ওদের সাথে সময় কাটাই। তারপর যা ইচ্ছে দেই। জিজ্ঞেস করেছিলাম উনাদের কী লাগবে। হাজেরা আপা বললেন, "আপনারা যা দেবেন তা-ই আমাদের লাগবে।"

গতকাল (২২ জুলাই) আমরা তিনজন গেলাম উনার আদাবরের বাসায়। বাচ্চারা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলো। আমরা ঢুকতেই হইহই করে উঠল। ছোট্ট একটা মেয়ে, বয়স তিন বা চার, আমাকে জিজ্ঞেস করল, "তুমিই কি তিসিলা আপু?"

ওর নাম হাফসা। হাজেরা বেগমের ৪০ জন শিশুর মধ্যে সম্ভবত কনিষ্ঠতম। সবথেকে বড়জন ক্লাস নাইনে পড়ে। ওরা স্কুলে যায়, সন্ধ্যায় প্রাইভেট পড়তে যায়, গান শিখতে যায়। আটজন আছে বোর্ডিং স্কুলে। ৩২ জন শিশু নিয়ে দুই কামরায় অসম্ভবকে সম্ভব করে চলেছেন হাজেরা বেগম। তাঁর নিয়মিত কোনো অর্থসংস্থান নেই। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী বিভিন্নভাবে সহায়তা করে উনাকে। কেউ কেউ জাকাতের টাকা দেয়। আটটি শিশুকে স্পন্সর করে একটি সংস্থা। বাকি শিশুদের নিয়ে এই বাসায় উনার মাসিক খরচ ৬৫ হাজার ছাড়িয়ে যায়।

এখানকার শিশুদের প্রায় সবাই যৌনকর্মীদের সন্তান। হাজেরা বেগম নিজে প্রাক্তন যৌনকর্মী। এই পেশার বঞ্চনা, যাতনার অভিজ্ঞতা থেকে শিশুগুলোর ভবিষ্যত তাকে ভাবায়। তাঁর ভাবনামতে যৌনকর্মীদের সন্তানেরা সবার পিছে, সবহারাদের নিচে। এমনকি ভিখারির সন্তানেরাও স্কুলে যাবার, সমাজের অংশ হবার সুযোগ পায়। যৌনকর্মীদের সন্তানদেরকে সমাজ স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করতে নারাজ। এই শিশুদেরকে শিক্ষা দিয়ে সুযোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে, নিজের অধিকারের জন্য লড়াই করতে শেখাতে চান হাজেরা বেগম। যেই শৈশব তিনি নিজে পাননি, তেমন একটি সুন্দর শৈশব এই শিশুদেরকে দিতে চান তিনি।



হাজেরা বেগম যা করছেন তা রীতিমতো অসাধ্য বলা চলে। আমরা তাই উনাকে সহযোগিতা করার ঔদ্ধত্ব দেখাতে চাই না। আমাদের সীমিত সাধ্য দিয়ে বড়জোর উনার ভার সামান্য হলেও লাঘব করার চেষ্টা করতে পারি হয়ত। সন্ধি কোনো এনজিও নয়, আমাদের অনেক অনেক টাকা নেই। এটি নিতান্তই ছাপোষা কিছু মানুষের ছোট্ট একটি নেটওয়ার্ক। হাজেরা আপার সাথে কথা বলে আমরা বুঝতে চেষ্টা করেছি কীভাবে আমরা উনার পাশে থাকতে পারি।

এক সন্ধ্যার আলাপে যে পথগুলো পেলাম সেগুলো হলো:

(১) শিশুদের স্পন্সর করা: 
প্রতি শিশুর জন্য মাসিক খরচ ৩ হাজার টাকা। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ বাচ্চাদের স্পন্সর করার ব্যাপারে খোঁজখবর করেছেন অতীতে। একজন করে শিশুর দায়িত্ব নেওয়ার সামর্থ্য আমাদের অনেকেরই আছে নিশ্চয়ই।

আপডেট: হাজেরা আপার সব শিশু এখন স্পন্সরশিপের আওতায় আছে।

(২) পড়ালেখার সরঞ্জাম দেওয়া:
উনাদের দরকার খাতা, কাগজ। অব্যবহৃত ডায়েরি, কাগজ কিংবা ব্যবহৃত কাগজের এক পিঠ খালি থাকলে সেটাও দিতে বলেছেন। আমাদের অনেকের অফিসে অনেক কাগজ নষ্ট হয়। অনেক ডায়েরি দুয়েক পাতা লিখে পড়ে থাকে। কারো কাছে অব্যবহৃত কিংবা অল্প ব্যবহৃত ডায়েরি থাকলে উনাদের দিতে পারেন। বাচ্চাদের দেওয়ার মতো গল্পের বই থাকলেও দেবেন। 

(৩) সরাসরি টাকা দেওয়া: 
সরাসরি হাজেরা বেগমের সাথে যোগাযোগ করে হাতে হাতে কিংবা বিকাশে টাকা দিতে পারেন। শিশুদের একটি স্থায়ী আবাস গড়তে হাজের আপা একটি জমি কিনতে চাচ্ছেন। চাইলে সেই জমির জন্য টাকা দিতে পারেন। তবে দেখা না করে, বাচ্চাদের সাথে সময় না কাটিয়ে শুধু টাকা নিতে উনি নারাজ। 

(৪) জমি কিনতে সহায়তা করা:
হাজেরা আপা শিশুদের একটি স্থায়ী ঠিকানা গড়তে চান। তার জন্য জমি কিনতে হবে। ঢাকার উপকণ্ঠে জমির সন্ধান দিয়ে কিংবা অর্থসংস্থান করে উনার ইচ্ছেপূরণে সহায়তা করতে পারেন।

(৫) শিশুদের দক্ষতা শেখানো:
ছবি আঁকা, গান গাওয়া, অরিগ্যামি বা অন্য যা কিছু পারেন গিয়ে হাজেরা আপার শিশুদের শিখিয়ে আসতে পারেন।

একটা ব্যাপার লক্ষণীয়। হাজেরা আপা চান উনার শিশুরা যেন ভালোবাসা পায়, আনন্দে থাকে। খাদ্য বস্ত্র বাসস্থান শিক্ষা চিকিৎসার প্রয়োজন অবশ্যই আছে। কিন্তু ভালোবাসা ছাড়া কোনো শিশুই মানুষ হয় না, এটা হাজেরা আপা খুব বোঝেন। আমরা যদি উনার শিশুদের সাথে বসে গল্প করি, ছবি আঁকি, গান গাই, এতেও ওরা খুশি হবেন। যাদের আর্থিক সাহায্য দেবার সুযোগ নেই, তারা অন্তত ভালোবাসাটুকু দিতে পারেন। আর্থিক সহায়তার থেকে তা কোনো অংশেই কম নয়। 

কেউ কেউ শিশুদেরকে নিয়মিত পড়ানোর, ছবি আঁকতে শেখানোর ব্যাপারে ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। এই ইচ্ছেগুলো পূরণ করতে পারলে কী যে দারুণ হবে তা বলার নয়। সেই সাথে এটাও ভাবতে অনুরোধ করব যে আসলেই কি নিয়মিত ওদের সময় দেওয়া আপনার পক্ষে সম্ভব কি না। জীবনের ব্যস্ততায় কথা দিয়ে কথা না রাখতে পারলে শিশুদের মন ভেঙে যাবে। অনেক বড় প্রতিশ্রুতি না দিয়ে এক বেলা ওদের সাথে বসে যে যা পারেন তা শিখাতে পারেন ওদের। 

সবশেষ প্রসঙ্গ। কীভাবে কার সাথে যোগাযোগ করবেন?
হাজেরা আপার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। উনার মোবাইল নাম্বার +8801712371196। উনার বিকাশ অ্যাকাউন্টও এই নাম্বারেই।

উনার ঠিকানা:
শিশুদের জন্য আমরা
হাউজ ৬/২ (দোতলা)
লুৎফর রহমান লেন
সুনিবিড় হাউজিং সোসাইটি
আদাবর, ঢাকা - ১২০৭

আদাবরে গিয়ে শনিরবিল মসজিদ বললে যে কেউ দেখিয়ে দেবে। গুগল ম্যাপে Sunibir Jame Mosque নামে পাবেন। মসজিদের সামনে গিয়ে হাজেরা আপাকে কল দিলেই হবে। 

হাজেরা আপা এবং তার সংস্থা "শিশুদের জন্য আমরা"র ব্যাপারে জানতে পারবেন উনাদের ব্রোশিওর থেকে। লিংক- https://goo.gl/vKQJYe

প্রবাসীরা সন্ধি'র পেপ্যালের মাধ্যমে কিংবা ব্যাংকে টাকা পাঠাতে পারেন। আপনার পাঠানো টাকার শতভাগ হাজেরা বেগমকে দেওয়া হবে। কেউ সশরীরে বইখাতা, কাগজ, ডায়েরি ইত্যাদি দিতে না পারলে সন্ধিকে দিতে পারেন। আমরা গিয়ে দিয়ে আসব ওদের।

বিস্তারিত জানতে সন্ধি'র ফেসবুক পেইজে মেসেজ পাঠান। তার আগে অবশ্যই সন্ধি'র ব্যাপারে ধারণা নিয়ে নিন। আমাদের চেনেন, আমাদের কাজ জানেন এবং আমাদের বিশ্বাস করেন, শুধুমাত্র এমন বন্ধুদের নিয়ে কাজ করে সন্ধি

সন্ধি'র ফেসবুক পেইজ: https://www.facebook.com/shondhi2013/



আপডেট (২১ নভেম্বর ২০১৭):

  • 'মেয়ে' নেটওয়ার্কের ২৪ জন সদস্য হাজেরা বেগমের ২৫ জন শিশুকে স্পন্সর করছে। বাকি শিশুদেরকে আগে থেকে স্পন্সর করছে অন্য একটি সংগঠন।
  • 'মেয়ে' নেটওয়ার্কের কিছু সদস্য এককালীন কিছু টাকা দিয়েছিলেন। হাজেরা বেগম নগদ টাকা না নিয়ে চেয়েছিলেন সেই টাকা দিয়ে আমরা তার শিশুদের জন্য একটি লকার বানিয়ে দিই। লকার প্রায় তৈরি। আশা করি এ সপ্তাহের মধ্যে দিয়ে আসতে পারব।
  • আমরা যে যতটুকু পারছি হাজেরা বেগমের বাসায় গিয়ে দেখা করছি, শিশুদের সাথে সময় কাটাচ্ছি।


আপডেট (২৪ নভেম্বর ২০১৭):
গত শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে আমরা কজন গেছিলাম হাজেরা আপাকে আলমারি দিয়ে আসতে। 


সে বিশাল এক দক্ষযজ্ঞ হলো। আলমারি সুন্দর হয়েছে। হাজেরা আপা এবং বাচ্চাদের পছন্দ হয়েছে। 


জিহান আপুর পাঠানো উপহার আর নাদিরা আপুর পাঠানো চকলেট পেয়ে বাচ্চারা যারপরনাই অভিভূত। 



কাদের ষ্টীল ফার্নিচারকে ধন্যবাদ বিশাল ডিসকাউন্টের জন্য। 

হাজেরা আপার শিশুদের কথা শুনে উনারা নিজে থেকে লাভ কমিয়ে এনেছেন। উনারা খুবই খুশি হয়েছেন এই কাজের সাথে যুক্ত হতে পেরে।

আপডেট (১০ ডিসেম্বর ২০১৭):
২৫ জন শিশুর ডিসেম্বরের খরচ হাজেরা আপাকে দিয়ে আসা হয়েছে।

লেখক:
Trishia Nashtaran
Originator and Coordinator, Meye Network

Sunday, July 9, 2017

হুটহাটের আচরণবিধি

গ্রুপের সকল সদস্য গ্রুপের নিয়ম পড়বেন। নিয়ম পড়ে, বুঝে, মেনে নিয়ে আপনি হুটহাটে আছেন বলে ধরে নেওয়া হবে। নিয়ম না জানার বা না মানার কারণে বিনা নোটিশে কাউকে গ্রুপ থেকে রিমুভ বা ব্যান করা অধিকার অ্যাডমিনরা সংরক্ষণ করেন।

হুটহাট কী?
মেয়ে নেটওয়ার্ক থেকে সৃষ্ট সমমনা উদ্যোক্তা/ব্যবসায়ী ও গ্রাহকদের পণ্য ও সেবাকেন্দ্রিক আড্ডার জায়গা হুটহাট। মেয়েদের হাত ধরে শুরু হলেও নারীপুরুষ সকলেই হুটহাটে আমন্ত্রিত।
রাঙতা কী?
মেয়ে নেটওয়ার্ক থেকে মূলত নারী উদ্যোক্তা এবং দেশি পণ্যের বাজার তৈরির প্রকল্প রাঙতা - Rangtaa। এ পর্যন্ত রাঙতা নামে অনেকগুলো মেলার আয়োজন করেছি আমরা। হুটহাটের মতো রাঙতাতেও সকল লিঙ্গের মানুষ আমন্ত্রিত।
হুটহাটে কি পুরুষেরা যোগ দিতে পারবে?
অবশ্যই। নারী, পুরুষ, তৃতীয় লিঙ্গ সকল জেন্ডারের মানুষ হুটহাটে আমন্ত্রিত।
হুটহাটে যোগ দিতে কী কী শর্ত পূরণ করতে হবে?
  • গ্রুপের আচরণবিধির সাথে একাত্মতা পোষণ করতে হবে।
  • নারীদেরকে সিস্টারহুডের সদস্য হতে হবে। বাকি ক্রেতাদেরকে মেয়ে নেটওয়ার্কের কোনো নির্ভরযোগ্য সদস্যের মাধ্যমে এবং উদ্যোক্তাদেরকে হুটহাটের কোনো নির্ভরযোগ্য নারী উদ্যোক্তার মাধ্যমে আসতে হবে।
  • নতুন সদস্যদেরকে প্রথমে ক্রেতা হিসেবে হুটহাটে সক্রিয় হতে হবে। হুটহাটে উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু করতে চাইলে রাঙতা পেইজে মেসেজ দিয়ে জানাতে হবে।
  • পারতপক্ষে ছদ্মনামের প্রোফাইল ব্যবহার না করাই ভালো। (অ্যাডমিনদের যাচাই ও বিবেচনা সাপেক্ষে হাতে গোনা কিছু অ্যাকাউন্ট গ্রহণ করা যেতে পারে)।
  • কেনা, বেচা, অদলবদল সব ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে করতে হবে। ব্যবসায়িক প্রোফাইলকেও ছদ্মনামের প্রোফাইল গণ্য করা হবে। (উদাহরণ: অমুক Owner)।

হুটহাটে সদস্যদের কার্যকলাপ সাধারণত কোন ধরনের?
কার্যকলাপ অনুযায়ী হুটহাটে সাত ধরনের সদস্য দেখতে পাবেন।
১) খরিদদার: ক্রেতা
২) কারিগর: যারা নিজের মেধা, সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে প্রস্তুতকৃত পণ্য বা সেবা বিক্রি করেন
৩) সওদাগর: যারা অন্যের তৈরি দেশি পণ্য সংগ্রহ করে বিক্রি করেন
৪) ভাংগারি: যারা পুরোনো জিনিস বিক্রি করেন
৫) ব্যবসেবক: যারা সেবা বিক্রি করেন (কুরিয়ার সার্ভিস, ডে কেয়ার, পার্লার ইত্যাদি)
৬) দোকানদার: যারা বিদেশি পণ্য আমদানি করে বিক্রি করেন
৭) আড়তদার: যারা উদ্যোক্তাদেরকে এক ছাদের নিচে আনতে সচেষ্ট (ই-কমার্স সাইট, সার্চ ইঞ্জিন ইত্যাদি)
দোকানদার এবং আড়তদার বাদে বাকি সবাই হুটহাটে অবাধে কেনাবেচা করতে পারবেন। দোকানদার এবং আড়তদারদেরকে রাঙতা পেইজে মেসেজ দিয়ে অনুমতি চাইতে হবে প্রতিবার।
বিশেষ ব্যতিক্রম ছাড়া হুটহাটে বিদেশি পোশাক, গয়না, প্রসাধনসামগ্রী, সাজসজ্জার অনুষঙ্গ ইত্যাদি বিক্রি করতে দেওয়া হয় না।


হুটহাটের সকল সদস্যের জন্য কিছু শর্ত
  • নারীদেরকে অবশ্যই মেয়ে নেটওয়ার্কের সাপোর্ট গ্রুপের (সিস্টারহুড) সদস্য হতে হবে।
  • প্রমিত বাংলা অথবা ইংরেজিতে লিখতে হবে।
  • পরস্পরের প্রতি আন্তরিক, শ্রদ্ধাশীল ও সহনশীল থাকতে হবে।
  • হুটহাট বাংলাদেশের অভ্যূদয়, ইতিহাস, ঐতিহ্য, অসাম্প্রদায়িকতা, ধর্মীয় সহনশীলতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। হুটহাটের সকল সদস্যের কাছ থেকে এ বিষয়ে একাত্মতা আশা করা হবে।
  • গ্রুপের ভেতরে ও বাইরে সম্মানপূর্ণ, নৈতিক আচরণ বজায় রাখতে হবে।
  • পারস্পরিক বোঝাপড়া আর চিন্তার পরিচ্ছন্নতা আমাদের কাছে ব্যবসায়িক মুনাফার থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসায়িক স্বার্থে ব্যক্তিগত মূল্যবোধের অবক্ষয়কে এখানে অযোগ্যতা মনে করা হবে। কোনোরকম নীচতা, শঠতার প্রমাণ পাওয়া গেলে বিনা জবাবদিহিতায় প্রয়োজনীয় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
হুটহাটের বিক্রেতাদের জন্য কিছু শর্ত
  • শুধুমাত্র নিবন্ধিত উদ্যোক্তারা হুটহাটে সক্রিয় ব্যবসা করতে পারবেন। নিবন্ধিত উদ্যোক্তা ছাড়া কারো কোনো ব্যবসায়িক সুবিধা, অসুবিধা, সহযোগিতা, যোগাযোগ কিংবা ক্রেতাদের ভালো-মন্দ অভিজ্ঞতায় রাঙতা বা হুটহাটের কোনো অংশগ্রহণ থাকবে না। নিবন্ধিত নন এমন কোনো উদ্যোক্তা হুটহাটে ব্যবসায়িক পোস্ট দেবেন না। হুটহাটে ব্যবসা করার উপায় জানতে ক্লিক করুন এখানে
  • আপনার ব্যবসার নাম, কাজ অনন্য হতে হবে। আপনার কাজে নিজস্বতার স্পর্শ থাকতে হবে।
  • কারিগরেরা নিজের পণ্যের ছবি দেবেন। অন্যের তৈরি করা পণ্যের ছবি দেখিয়ে অর্ডার নেওয়া যাবে না।
  • কারো কাজ দেখে অনুপ্রাণিত হলে তার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে হবে। কাজ এবং দামের ব্যাপারে তার সাথে আলাপ করে নিতে হবে।
  • হুটহাটের কোনো কারিগর বা সওদাগরের পণ্য গ্রুপের ভিতরে বা বাইরে রিসেল করতে চাইলে, মূল কারিগরের অনুমতি নিতে হবে।
  • ২৪ ঘণ্টায় একটার বেশি পোস্ট দেবেন না।
  • হুটহাটের দোকানদারেরা নিজস্ব পোস্ট দেবেন না। কোনো খরিদদার যদি গ্রুপে এমন কোনো পণ্যের খোঁজ করেন যেটা আপনার কাছে রয়েছে, সেক্ষেত্রে কমেন্টে পণ্যের ছবি বা লিংক দিতে পারেন।
  • আড়তদারেরা কোনো পোস্ট দেওয়ার আগে রাঙতা - Rangtaa পেইজে মেসেজ দিয়ে অনুমতি চাইবেন।
  • গ্রুপে প্রকাশ্যে পণ্যের দাম জানাবেন। একই পণ্য ভিন্ন ভিন্ন হাটুরে ভিন্ন ভিন্ন দামে কিংবা অতিরিক্ত দামে বিক্রি করলে তার জন্য হাটুরেরা জবাবদিহিতার জন্য প্রস্তুত থাকবেন।
  • একসাথে একাধিক পণ্য বিক্রি করতে হলে পেইজ থেকে পোস্ট করবেন অথবা ছবি ছাড়া পোস্ট দিয়ে তার কমেন্টে আলাদা আলাদা দামসহ পণ্যের ছবি দেবেন।
  • মূল পোস্টে একাধিক ছবি দিতে চাইলে কোলাজ কিংবা স্লাইডশো হিসেবে দিন।
  • যে পোস্ট হুটহাটের জন্য অনন্য নয় সেটা এখানে দেবেন না।
  • প্রকাশ্যে ব্যবসা করবেন। ইনবক্স মার্কেটিং/কেনাবেচা থেকে বিরত থাকবেন।
  • খেয়াল রাখবেন যেন আপনার কোনো উদ্যোগ মেয়ে নেটওয়ার্কের কোনো উদ্যোগের সাথে সাংঘর্ষিক না হয়।
হুটহাটের ক্রেতাদের জন্য কিছু শর্ত

  • হুটহাটের নিবন্ধিত উদ্যোক্তাদের থেকে কেনাকাটা করুন। নিবন্ধিত নন এমন কোনো উদ্যোক্তার থেকে কিছু কিনতে চাইলে নিজ দায়িত্বে কিনবেন। অনিবন্ধিত কোনো উদ্যোক্তার সাথে ক্রেতাদের ভালো-মন্দ কোনো অভিজ্ঞতায় রাঙতা বা হুটহাটের কোনো অংশগ্রহণ থাকবে না। নিবন্ধিত উদ্যোক্তাদের তালিকা দেখতে ক্লিক করুন এখানে
  • হুটহাটে পাকিস্তানি পণ্য খুঁজবেন না।
  • বিশেষ ব্যতিক্রম ছাড়া ভারতীয় কিংবা অন্য কোনো বিদেশি পণ্য খুঁজবেন না। (ব্যতিক্রম: এমন কোনো পণ্য যা বিলাসদ্রব্য নয় এবং বাংলাদেশে তৈরি হয় না।)
  • দর কষাকষি করবেন না।
  • মূল পোস্টে একাধিক ছবি দিতে চাইলে কোলাজ কিংবা স্লাইডশো হিসেবে দিন।
  • কোনো উদ্যোক্তাকে অন্য কোনো উদ্যোক্তার পণ্য কপি করতে, রেপ্লিকা তৈরি করতে অনুরোধ করবেন না।
  • অন্যের অনুসন্ধানমূলক পোস্টে নিজের জন্য জিনিস খুঁজতে যাবেন না। নিজের কিছু লাগলে আলাদা পোস্ট দিন।
  • কোনো পণ্য বা সেবা ভালো লাগলে হুটহাটে রিভিউ দেবেন।
  • পণ্য বা সেবা নিয়ে অসন্তোষ থাকলে প্রথমে সংশ্লিষ্ট বিক্রেতাকে গঠনমূলকভাবে জানাবেন। তাতে সমস্যার সমাধান না হলে রাঙতা - Rangtaa পেইজে মেসেজ দিয়ে আলোচনাসাপেক্ষে গ্রুপে নেগেটিভ রিভিউ দিতে পারেন।
  • কোনো অবস্থাতেই দুর্ব্যবহার, ব্যক্তি-আক্রমণ, অসম্মান করবেন না।



হুটহাটের উদ্যোক্তাদের জন্য কিছু পরামর্শ
  • ব্যবসায়িক লেনদেনে সচেতন, সতর্ক ও দায়িত্বশীল থাকুন। কাউকে বিনাবাক্যে বিশ্বাস করে ঝুঁকির মুখে পড়বেন না যেন।
  • অ্যাডভান্স পেমেন্ট ছাড়া বেচাকেনা না করাই ভালো।
  • ট্রেড লাইসেন্স করিয়ে নিন। এবং সব আর্থিক লেনদেনের রশিদ রাখুন।
  • কোনো ক্রেতা বা বিক্রেতাকে নিয়ে অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতা হলে রাঙতা - Rangtaa পেইজে মেসেজ দিয়ে জানিয়ে রাখুন। আপনার দেওয়া তথ্য ভবিষ্যতে আরো অনেককে সম্ভাব্য ঝামেলা থেকে রক্ষা করতে পারে।
হুটহাটে যা যা বারণ
  • ব্যক্তিআক্রমণ: ব্যক্তিগত রেষারেষি গ্রুপে টেনে আনবেন না। পরস্পরের প্রতি সম্মানজনক পেশাদারিত্ব বজায় রাখুন করুন।
  • শঠতা: ব্যবসায়িক স্বার্থে মিথ্যা বলা, বিভ্রান্ত করা, কূটকৌশল অবলম্বন করা ইত্যাদি আচরণকে এখানে গর্হিত গণ্য করা হবে। অসত্য রিভিউ দেওয়া, ভালো রিভিউ দিতে ক্রেতাকে প্রভাবিত করা ইত্যাদি অসদাচরণ বলে গণ্য হবে।
  • অন্ধ অনুকরণ: অন্য কারো কাজ অবিকল অনুকরণ করবেন না। অন্যের কাজ থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারেন। তাতে নিজের রুচি, সৃজনশীলতা যোগ করে কাজ করবেন।
  • প্রকাশ্যে ব্যবসায়িক সুনাম ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা: আলোচনা ও প্রমাণ ছাড়া প্রকাশ্যে কারো বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযোগ উত্থাপন করা যাবে না যাতে তার ব্যবসায়িক সুনাম ক্ষুণ্ণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অভিযোগ থাকলে নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সেটা নিয়ে কাজ করতে হবে।
  • ধর্মপ্রচার: ধর্ম বিক্রয়যোগ্য পণ্য নয়। ব্যবসার মোড়কে ধর্ম বিক্রি করবেন না।
  • রাজনৈতিক প্রচারণা: কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির স্বার্থে হুটহাটকে ব্যবহার করা যাবে না।
  • ফ্লাডিং: ফ্লাডিং মানে মুহুর্মুহু পোস্টের বন্যা বইয়ে দেওয়া। নিজের পোস্ট দিয়ে গ্রুপের ওয়াল ভরিয়ে ফেলবেন না।
  • পাকিস্তানি পণ্য কেনাবেচা/প্রচার: একাত্তরের জেনোসাইডের জন্য যতদিন পাকিস্তান বাংলাদেশের কাছে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা না চাইবে ততদিন পর্যন্ত পাকিস্তানের কোনোরকম অর্থনৈতিক মুনাফায় বাংলাদেশের অংশগ্রহণের বিপক্ষে আমরা।
  • ভারতীয়/চাইনিজ/অন্যান্য বিদেশি পণ্য কেনাবেচা/প্রচার: এদের বাজার অনেক বড়। বাংলাদেশের বাজার এসব পণ্যে ভরা। হুটহাট সেই স্রোতে যোগ দিতে অনাগ্রহী। বিশেষ ব্যতিক্রম ছাড়া ভারতীয় কিংবা অন্য কোনো বিদেশি পণ্য হুটহাটে কেনাবেচা করা যাবে না। (ব্যতিক্রম: এমন কোনো পণ্য যা বিলাসদ্রব্য নয় এবং বাংলাদেশে তৈরি হয় না।)
  • দিবসভিত্তিক প্রচারণা: আমরা কোনো বিশেষ দিনের পণ্যায়ণে বিশ্বাসী নই। তাই মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, নারী দিবস, ভালোবাসা দিবস ইত্যাদি উপলক্ষকে কেন্দ্র করে কেনাকাটার বাহুল্য সৃষ্টি করবেন না। তবে উৎসবকেন্দ্রিক ব্যবসায়িক প্রচারণায় বাধা নেই।
  • সদস্য সংগ্রহ করা: মেয়ে নেটওয়ার্কের নয় এমন কোনো গ্রুপের আমন্ত্রণ দেওয়া যাবে না।
  • লাইক/ভোট চাওয়া: কোনো কারণে লাইক বা ভোট চাইতে হলে রাঙতা - Rangtaa পেইজে মসেজ দিয়ে অ্যাডমিনদের জিজ্ঞেস করুন। অ্যাডমিনের অনুমোদনসাপেক্ষে লাইক/ভোট চাওয়া যাবে। লাইক বা ভোটের জন্য সদস্যদেরকে ইনবক্সে বিরক্ত করবেন না।

কোনো উদ্যোক্তা বা গ্রাহককে নিয়ে অভিযোগ থাকলে কী করতে হবে?
  • হুটহাটের কোনো উদ্যোক্তা বা গ্রাহকের কোনো আচরণে বা কাজে অসন্তোষ থাকলে প্রথমে ব্যক্তিগত পর্যায়ে আলাপ করে সুরাহা করার চেষ্টা করবেন। তাতে কাজ না হলে আলাপের প্রমাণসহ রাঙতা - Rangtaa পেইজ বরাবর মেসেজ করে অভিযোগ জানাবেন। এরপর গ্রাহকের ক্ষেত্রে হুটহাটে এবং উদ্যোক্তার ক্ষেত্রে রাঙতা ইনকিউবেটর গ্রুপে পোস্ট দিয়ে গঠনমূলক আলোচনার চেষ্টা করতে পারেন। এই পুরো প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা বা গ্রাহক নিজে যোগাযোগ করবেন। তার হয়ে অন্য কোনো উদ্যোক্তা বা গ্রাহক অভিযোগ জানাবেন না, কিংবা এ নিয়ে কোনো আলাপ তুলবেন না। কোনো অবস্থাতেই কারো ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে চেষ্টা করবেন না।
  • হুটহাটের সাথে সংশ্লিষ্ট নয় এমন কোনো উদ্যোগ বা উদ্যোক্তার ব্যাপারে
    অন্যদেরকে সচেতন করার প্রয়োজন বোধ করলে নিজের টাইমলাইনে পাবলিক পোস্ট দিন এবং ভোক্তা অধিকার আইনে অভিযোগ জানান। এরপর রাঙতা - Rangtaa বরাবর মেসেজ দিয়ে সেই পোস্ট বা অভিযোগ হুটহাটে শেয়ার করার অনুমতি চাইতে পারেন।
কীসের ভিত্তিতে মেম্বার রিমুভ/ব্যান করা হবে?
কোনো সদস্য হুটহাটের স্পৃহা ধারণে অক্ষম প্রমাণিত হলে তাকে প্রয়োজন অনুসারে রিমুভ/ব্যান করা হবে।
কোনো পোস্ট বা কমেন্টের ব্যাপারে আপত্তি থাকলে কী করবেন?
কোনো পোস্ট আপত্তিকর মনে করলে পোস্টটি রিপোর্ট করুন। কোনো কমেন্ট আপত্তিকর মনে হলে রাঙতা - Rangtaa পেইজে মেসেজ দিয়ে জানান। কোনো অবস্থাতেই কাউকে আঘাত করে কিছু বলবেন না।





পোস্ট অ্যাপ্রুভ না হলে কী করবেন?
২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করবেন। তারপর রাঙতা - Rangtaa পেইজে পেন্ডিং পোস্টের স্ক্রিনশটসহ মেসেজ দিয়ে কারণ জানতে চাইবেন।
হুটহাট থেকে কি রাঙতা ছাড়া আর কোনো মেলা বা অন্য কোনো উদ্যোগের আয়োজন করা যাবে?
যাবে, যদি তা রাঙতা সাংঘর্ষিক না হয়। অন্য মেলার আয়োজন কিংবা অন্য মেলায় অংশগ্রহণ করতে চাইলে রাঙতা পেইজে মেসেজ দিয়ে আলোচনা করে নিন।

হুটহাট এবং এখানকার উদ্যোক্তাদের কথা বাইরে প্রচার করা যাবে?
অনুমতিসাপেক্ষে। এই গ্রুপ থেকে কোনো তথ্য গ্রুপের বাইরে ব্যবহার করতে চাইলে অবশ্যই তথ্যদাতা ও অ্যাডমিনদের অনুমতি নেবেন। প্রচারমাধ্যমে কোনো আলোচনা বা সাক্ষাতকারের সময় এই গ্রুপের ভূমিকা উল্লেখ, কৃতজ্ঞতা স্বীকার করবেন।
সবশেষ কথা

হুটহাটের স্পৃহা বোঝার চেষ্টা করুন। পেশাদারিত্ব ও সততা বজায় রাখুন। কোনো প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় রাঙতাকে জিজ্ঞেস করুন। আমাদের প্রাণের এই মেলায় সাথে থাকুন। :)